প্রত্যেক পিতামাতাকে নিচের এই উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো জেনে নেওয়া আবশ্যক
অনেক পিতামাতা তাদের সন্তানদেরকে সমান্য কিছু কোরআন শিখাতে চান। ইসলামের সামান্য কিছু মাসলা মাসায়েল,নামায,রোযা টুকটাক এগুলো শেখাতে চান। এটা কি ঠিক হবে?
উত্তর: মুসলিমের জন্য এরকম চিন্তা করা বৈধ নয়। বরং প্রত্যেকটা মুসলিমকে এরকম আশা রাখতে হবে যে কোরআন ও হাদিস আমি সম্পূর্ণভাবে সঠিকটা বুঝবো, আল্লাহ আমার প্রতি যা ফরয করেছেন তা জানবো এবং ওয়াজিব মুস্তাহাব গুলো শিখবো। প্রথমত নিয়ত ঠিক থাকতে হবে। আল্লাহ যাকে যতোটুকু তাওফিক দান করেন সে ততোটুকুই পারবে। কিন্তু কোনো মুসলিম যদি প্রথম থেকেই গড়িমসি করে, নিয়ত ঠিক না করে আর বলে যে: আমি কিছুই শিখবোনা, শুধু কোরআন তেলাওয়াত শিখবো, নামায, রোযা শিখবো আর কিছু শিখবোনা। তাহলে তার গুনাহ হবে। তার ইসলাম পরিপূর্ণ হবে না। এটা একপ্রকার ইসলামকে ঘৃণা করার মতোই।
এটা হচ্ছে শিক্ষার বিষয়, জ্ঞানের ও বিশ্বাসের বিষয়। এটা বিশ্বাস করতে হবে মানতে হবে। এটা জান্নাতের জন্য পাঠানো হয়েছে, খাওয়ার জন্য নয়। মানুষকে দেখানোর জন্য না। এই বিদ্যা থেকে সবকিছুই শিখতে হবে আল্লাহর জন্য, পরকালের জন্য, জান্নাতের জন্য।
তাই কোনো পিতামাতা যদি এই কথা মাথায় রাখেন যে আমার সন্তানকে ইসলামের সামান্য কিছু শিখাবো, সব শিখাবোনা, তাহলে তিনি বড় ভুল করবেন এবং আমানতের খেয়ানত করবেন। এজন্য প্রত্যেক পিতামাতাকে চাইতে হবে তার সন্তান যেনো বড় আলেম হয়। দুনিয়াও শিখাবেন এবং দ্বীনের সকল বিষয়েও পারদর্শী বানাবেন।
এই আশা করার পরেও যদি সম্ভব না হয়, চেষ্টা করার পরেও যদি না হয় তবে মনে রাখতে হবে, আল্লাহ আপনার সন্তানকে যতোটুকু কবুল করবেন ততোটুকুই হবে। কিন্তু আপনাকে এই নিচু মনমানসিকতা ও ভূল চিন্তাভাবনাগুলো থেকে বের হতে হবে এবং তা ত্যাগ করতে হবে।
সম্মানিত অভিভাবক মন্ডলী প্রতি কোর্স কেন্দ্রিক অপরিহার্য ও গুরুত্বপূর্ণ সার্বিক বিষয়াবলী:
অতএব ২৪ ঘন্টার মধ্যে দ্বীন শিক্ষার জন্য, জান্নাতের জন্য, নিজের কল্যাণের জন্য ,পরিবারের কল্যাণের জন্য, সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য, দৈনিক মাত্র দুই ঘন্টা নির্ধারণ করা আপনার জন্য কষ্টসাধ্য হওয়ার কথা নয়।
ইসলামের শিক্ষামূলক কাজে দুই ঘন্টা ব্যয় করার ব্যাপারে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সন্তুষ্ট থাকা উচিত, তা না পারলে নিজের সাথেই যুদ্ধ করা উচিত, যে কোন মূল্যে দুই ঘন্টা আপনাকে বের করতেই হবে অন্যথায় ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দর করে সাজাতে পারবেন না।
তাই অনুগ্রহ পূর্বক মাত্র দুটি ঘন্টা আল্লাহর জন্য ছেড়ে দিন, আর এর জন্য কোন গড়িমসি ও খোড়া অজুহাত পেশ করার ইচ্ছা করবেন না। তাহলে দেখবেন এই সামান্য ত্যাগের কারণে আপনার কত বেশি উন্নতি হয় এবং পরকালে আল্লাহ আপনাকে কত বেশি মর্যাদা দান করেন! শুধু সময়ের অপেক্ষা! আল্লাহ আমাদের সবাইকে সেই পর্যন্ত লেগে থাকা তাওফীক দান করুন!
প্রিয় সম্মানিত অভিভাবক মন্ডলীদের কাছে বিশেষ আবেদন: আপনারা নিজেদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করার জন্য দৈনিক সন্তানদের পিছনে মাত্র দুই ঘন্টা সময় দিবেন এবং আপনাদের কলিজার টুকরা শিক্ষার্থীরা যা শিখবে আপনারাও স্বামী-স্ত্রী সহ শিখতে চেষ্টা করবেন, এমনকি পারিবারিকভাবে সকলেই শেখার চেষ্টা করবেন তাহলে আপনাদের দেখাদেখি আপনাদের সন্তানগুলো ইসলামী শিক্ষাকে ভালবাসতে শুরু করবে, তখন আর তাদেরকে জোর করে পড়াতে হবে না এবং এর মাধ্যমে আপনাদেরকে এবং আপনাদের পারিবারিকভাবে অন্য কোথাও আর কোন বিষয় ভিত্তিক কোন কোর্সে পড়ালেখার জন্য ছোটাছুটি করতে হবে না। আপনার সন্তানরা যা শিখছে আপনিও যদি তাই শিক্ষা করেন তাহলে একটি দুটি নয় বরং ২40 টি বিষয় আপনিও শিখতে পারবেন, তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন সন্তানের সাথে লেগে থাকাটা আপনার জন্যও কতটা অপরিহার্য।
আপনি নিশ্চয়ই জানেন, যে সমস্ত দ্বীনি ভাই ও বোনেরা বছরের পর বছর বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি হয়ে থাকেন তারা কিন্তু এভাবে বহু সময় নষ্ট করেও খুব সামান্য কিছু ছাড়া বেশি কিছু শিখতে পারছে না।
অবশেষে দেখা যাবে বিভিন্ন কোর্সে সামান্য কিছু শেখার নামে বহু বহু গুণে সময় নষ্ট হল, বলা যায় একপ্রকার ঘুরাঘুরি ছাড়া তেমন কিছুই অর্জন হলো না
এজন্য দেখবেন বহু মানুষ ১০/১২ বছর অনলাইনে বিভিন্ন কোর্সে পড়া লিখা করেও যেই সেই, তেমন কোনোই উন্নতি নেই। কারণ কি? উত্তর :এর বহু কারণ রয়েছে:
তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ হলো: কোর্সের প্রতিষ্ঠানগুলোর টার্গেট খুবই সামান্য,
শিক্ষার্থীদের তারা এবিসিডির মত প্রাথমিক কিছু শিক্ষা দিতে চায়, কোর্স পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীর উপর কোন বল প্রয়োগ নেই, জোর জবরদস্তি নেই, বাধ্যবাধকতা নেই।
তদ্রূপ শিক্ষার্থীরাও বড় কোনো টার্গেট হাতে নিতে পারেনা, বা শিক্ষার জন্য আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রবল হলেও কোর্সগুলোতে তাদের পছন্দমত পাঠদান হয় না
যার ফলে বহু বছর পড়াশোনা করেও কেউই কোন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও বড় দক্ষতা অর্জন করতে পারে না।
তাই সম্মানিত অভিভাবক মন্ডুলিন কাছে বিশেষ অনুরোধ করবো আমাদের কোর্সে ভর্তি করানোর পর আপনারা আপনাদের সন্তানের পোশাকের মতই লেগে থাকুন, দৈনন্দন ক্লাসের পড়াগুলো নিজে শিখুন, সন্তানকে শিক্ষা দিন নিজের সাথে যুদ্ধ করুন! প্রবৃত্তিকে কখনো বিজয়ী হতে দিবেন না, অলসতা করবেন না। মানুষের কথায় কান দিবেন না, সদা সর্বদা শিক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখুন, দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করুন, আল্লাহই আপনাকে সাহায্য করবেন, ১০-১২ টি বছর পর আপনি নিজেকে এবং আপনার সন্তানকে ইসলামের যে কোন বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে দেখতে পাবেন ইনশাআল্লাহ।
তখনই আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু পার্থক্য বুঝতে পারবেন।
সর্বশেষ একটা কথা মনে রাখবেন কেউ যদি উত্তম ধারণা করে তাহলে আল্লাহ তাকে তার চাইতেও উত্তম কিছু দান করেন। আর কেউ যদি মন্দ ধারণা পোষণ করেন তাহলে আল্লাহ তাকে উত্তম কোন কিছু থেকে বঞ্চিত করেন। কারণ ধারণা একটি বড় এবাদত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: তোমরা ধারণা থেকে বেঁচে থাকো, ধারণা হচ্ছে সবচেয়ে বড় মিথ্যা।
অন্য হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: আল্লাহ তায়ালা কোন ব্যক্তির সাথে ঐ আচরণই করেন বান্দা আল্লাহর প্রতি যেমন ধারনা রাখে।
এজন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: তোমাদের কেউ যেন মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ না করে আর তোমাদের কেউ যেন আল্লাহর প্রতি সুধারণা না করে মৃত্যুবরণ না করে।
© 2024 Madinah Children’s School. All Rights Reserved. Developed By Al Nur Digital Solutions